মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় (১০০% কার্যকরী)

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়
মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়ঃ আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক, আপনি কি মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় জানতে চান? তাহলে এই পোস্ট টি আপনার জন্যই। উপায়গুলো জানতে সম্পূর্ণ পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

মোবাইল আসক্তি আমাদের ধীরে ধীরে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত করছে। এমন কি আমরা মোবাইলে এমন ভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছি যে মা-বাবা আমাদের  মোবাইল কিনে না দিলে বা দিবে না এমন মন্তব্য করলে আমরা তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করি। 

পত্রিকায় এমন অহরহ নিউজ বের হয় প্রতিদিন,  মোবাইল কিনতে টাকা না দেওয়ায় আ'ত্মহ'ত্যা, পড়ালেখা ত্যাগ, বাসা থেকে পালিয়ে গিয়ে কারখানায় কাজ করা ইত্যাদি। এমন অনেক নিউজ প্রকাশে আসে আবার অনেক নিউজ গোপনেই সমাদৃত হয়। এখন ছোট থেকে বৃদ্ধ বয়সের সবাই মোবাইল আসক্তি তে জড়িয়ে পড়েছে। 

চাইলেও কেউ এখন তা ছাড়তে পারছে না। ঘুম থেকে শুরু করে খাবার পর্যন্ত মানুষ ঠিক সময়ে খায় না মোবাইলে আসক্ত হয়ে। গবেষকদের মতে, রাতে জেগে এবং দিনে ২৪ ঘন্টার ১২ ঘন্টাই মানুষ মোবাইলে সময় দেয়। যার কারণে মানুষের মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। 

মানুষ কোনো কাজে মন বসাতে পারে না। অধিকাংশ ব্রেইন স্ট্রোকের কারণও মোবাইলে বলে গবেষকরা মনে করেন। এসব জটিল সমস্যা থেকে বাঁচতে আমাদের মোবাইল ব্যবহার করাই সচেতন হতে হবে। আজকে আপনাদের সাথে মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু টেকনিক বা উপায় শেয়ার করবো আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন।

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়


মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় গুলো আপনাদের কয়েকটি পয়েন্ট আকারে বুঝালে ভালো বুঝতে পারবেন। নিচে কয়েকটি কার্যকরী উপায় তুলে ধরা হয়েছে এবং ব্যাখা করা হয়েছে। যেমনঃ

ঘুরে-বেড়ানো

সাধারণ আমরা প্রকৃতির সাথে সময় কাটে আমাদের মস্তিষ্ক থাকে ফ্রেস। মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রথম এবং প্রধান উপায় হলো। প্রকৃতির সাথে সময় কাটানো। কিছু দিন পর পর মস্তিষ্ক ফ্রেস করতে ঘুরে আসুন। মানুষ ঘর কাতুরে হলে  বা একাকিত্ব অনুভব করলে কোনো কিছু সঙ্গ খুজে। এখন বলতে গেলে মোবাইল সেই সঙ্গীতে পরিণত হয়েছে মানুষের কাছে। তাই যথা সম্ভব  প্রকৃতির সাথে সময় কাটানোর চেষ্টা করতে হবে।

খেলাধুলা করা

শৈশব সুন্দর হয় কেননা মানুষ তখন খেলাধুলা,বন্ধু-বান্ধবের মাঝে নিজেকে মাতিয়ে তুলে। শৈশবে কোনো কিছু দিয়েই বাচ্চাদের আটকানো যায় না,মা-বাবার অজস্র মার খেয়েও তারা মাঠে খেলতে ছুটে যায়।কেননা মূলত আনন্দ টা ওইখানের।কিন্তু এই অধুনিক যুগে এসে,শৈশব কেনো শিশুরাও এখন খেলতে পছন্দ করে না। তার কারণ মোবাইল আসক্তি।খেলাধুলা করা,বন্ধু-বান্ধবের আড্ডায় নিজকে মাতিয়ে তুলা মোবাইল আসক্তি কমাতে অনেকটা সাহায্য করে।তাছাড়া খেলাধুলা করা একধরনের শারীরিক ব্যয়াম। যা আমাদের মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে।

বিভিন্ন ধরনের বই পুস্তক পড়া

আপনার মোবাইল আসক্তি বেড়ে যায় সময় কাটেতে গিয়ে। আমরা কোনো কাজ করতে চাই না আবার কোনো কাজ না থাকলে বিরক্ত হয়।এক্ষেত্রে আমরা অবসর সময় কাটাতে গিয়ে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ি। তাই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলা ভালো। এতে জ্ঞানের অর্জন করা হলো সাথে অবসর সময় কাটলো এবং মোবাইল আসক্তিও কমলো।

অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস আনইন্সটল করা

আমাদের মোবাইলে এমন কিছু অ্যাপস আছে যা মূলত আমাদের কোনো উপকারে আসে না কিন্তু আমাদের সময় ঠিকি ওই অ্যাপস গুলোতে ব্যয় হয়। যেমন-টিকটক,ইন্সটাগ্রাম ইত্যাদি। এগুলো শুধু আমাদের সময় নষ্ট করে না সাথে আমাদের মোবাইলের প্রতি আগ্রহ এবং আসক্তি দুইটায় বাড়িয়ে দেয়।কাজেই অতি প্রয়োজনিও অ্যাপস ব্যতীত অন্য অ্যাপস রাখা উচিত নয়। এতে আমাদের মোবাইল নিয়ে আগ্রহ কমবে। এবং আমরা আসক্তি মুক্ত হবো।

পরিবারের সদস্যদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলা

অধিকাংশ মানুষে মানুসিক চাপ বা কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তা করলে তা কারো সাথে শেয়ার করলে অনেক টা চিন্তা মুক্ত হয় এবং পেরেশানি কমে। বেশিভাগ মানুষ চ্যাটিং করতে অভ্যস্ত। যা তাদের মোবাইলের প্রতি আসক্ত বৃদ্ধি করে। অনেক সময় দেখা যায় আপনার পরিবারের কেউ আপনার সাথে গল্প করতে আপনার কাছে এসেছে কিন্তু আপনি অন্য জায়গায় মেসেজিং করতে ব্যস্ত। যা আপনার কাছ থেকে আপনার প্রিয় মানুষদের দূরত্ব সৃষ্টি করে। ফলে আপনি একাকিত্ব অনুভব করেন। ফলস্বরূপ আপনি মোবাইলের আসক্তি থেকে মুক্তি পান না।

মোবাইল ব্যবহারের নির্দিষ্ট সময় মেনে চলা

সময় দেখতে গিয়ে অনেক সময় আমরা মোবাইলে অন্য সব অ্যাপস থেকে ঘুরে আসি কিন্তু আমাদের সময় আর দেখা হয় না। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৮ ঘন্টা ঘুমালেও বাকি সময় কখন ফুরিয়ে যায় তা আমরা খেয়াল করতে পারি না। মোবাইল আমাদের তার নিজের আয়ত্ত নিয়ে ফেলেছে। তাই নির্দিষ্ট সময় বিবেচনা করে আমাদের মোবাইল ব্যবহার করতে হবে। কত মিনিট বা দিনে কত ঘন্টা ফোন চালাবো তা আমাদের একটি নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। মনে রাখতে হবে "আমরা মোবাইলের নিয়মে নয় মোবাইল আমাদের নিয়মে পরিচালিত হবে"

প্রয়োজন ব্যতীত মোবাইল নিজের কাছ থেকে দূরে রাখা

আমরা মোবাইলকে নিজের নিত্যদিনের সঙ্গী হিসেবে ব্যবহার করছি যা আমাদের মোবাইল আসক্তি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। আমরা হাতের কাছে মোবাইল পেয়ে তা অনবরত ব্যবহার করতে থাকি যার ফলে এই মোবাইল আসক্তি আমাদের দ্বিগুন রূপ ধারণ করছে। তাই সবসময় হাতের কাছ থেকে মোবাইলের দুরুত্ব বজায় রাখা। তাহলে মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমতে থাকবে।


সামাজিক যোগাযোগ সাইডগুলো লগআউট করে রাখা

আমরা মোবাইল মূলত সামাজিক সাইডগুলোতেই বেশি সময় ধরে ব্যবহার করে থাকি। যা আমাদের মোবাইল আসক্তি বাড়িয়ে দেয়। সামাজিক সাইডের একাউন্ট লগইন করে রাখার ফলে আমরা যেকোনো সময় প্রবেশ করতে পারি এবং তাতে সময় ব্যয় করি। যা আমাদের সময় ব্যয় এবং মোবাইল আসক্তি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। সামাজিক সাইড একাউন্ট লগআউট করে রাখলে তা বার বার লগইন করতে বিরক্তবোধ থেকে এই সাইডগুলো কম ব্যবহার করি। ফলে আমাদের মোবাইলের প্রতি আর্কষণ অনেকগুন কমে যায়।

ঘুমের সময় মোবাইল বিছানা থেকে দূরে রাখা

মোবাইল একটি ইলেকট্রনিকস ডিভাইস যা আমাদের মস্তিষ্ক বিপলে নিতে সাহায্য করে। ঘুমের সময় ফোন ব্যবহার মস্তিষ্কের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পেলে। ঘুমের আগে ফোন ব্যবহার করলে মোবাইলে দেখা তথ্যসমূহ আমাদের মস্তিষ্কে প্রতিফলন ঘটায় যা আমাদের ঘুম নষ্ট করে।

ঘুমের সময় মোবাইল বিছানা থেকে দূরে রাখা

মোবাইল একটি ইলেকট্রনিকস ডিভাইস যা আমাদের মস্তিষ্ক বিপলে নিতে সাহায্য করে। ঘুমের সময় ফোন ব্যবহার মস্তিষ্কের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পেলে। ঘুমের আগে ফোন ব্যবহার করলে মোবাইলে দেখা তথ্যসমূহ আমাদের মস্তিষ্কে প্রতিফলন ঘটায় যা আমাদের ঘুম নষ্ট করে। ঘুমানোর সময় বিছানায় মোবাইল মাথার বা বালিশের পাশে রাখলে তার তেজস্ক্রিয় পদার্থ আমাদের ব্রেইনে চাপ সৃষ্টি করে। যা থেকে আমাদের মাথা ব্যথা,মাইগ্রেনের ব্যথা ইত্যাদি রোগের উপক্রম হয়। তাই ঘোমানোর সময় মোবাইল ব্যবহার না করা এবং বিছানা হতে তা দুরুত্বে নিয়ে রাখা।

মোবাইল নোটিফিকেশন অফ রাখা এবং ডিসপ্লে আলো কমানো

মোবাইলে বিভিন্ন প্রয়োজনী-অপ্রয়োজনী নোটিফিকেশন আসার ফলে আমরা বার বার মোবাইল হাতে নি এতে আমাদের মোবাইল আসক্তি বেড়ে যায়। আবার মোবাইলো আলো বাড়ানো থাকলে মোবাইলের প্রতি গভীর মনযোগ কাজ করে তাও মোবাইল আসক্তি একটি কারণ। তাই সব সময় মোবাইলের আলো কমিয়ে রাখা। এতে চোখের উপর মোবাইলের ক্ষতিকর রশ্মি কম প্রতিফালিত হয়। এবং আমাদেরও মোবাইল ব্যবহার হতে মনযোগ হ্রাস পায়।

আশা করি উপরের নিয়ম গুলো কয়েক সপ্তাহ মেনে চললে আপনার মোবাইলের প্রতি আসক্তিভাব কমে যাবে। মোটকথা মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে মোবাইল থেকে নিজেকে যথাসম্ভব দূরে রাখা এবং অফলাইন কোন কাজে নিজেকে ব্যাস্ত রাখা। তাহলে আপনার আসক্তি লোপ পেতে থাকবে।

আমাদের শেষ কথা

"মানুষ অভ্যাসের দাস"। তাই আপনি নিজেকে যেভাবে পরিচালনা করবেন ঠিক সেই ফল লাভ করতে পারবেন। মানুষ চাইলেই সব সম্ভব তাই একটু চেষ্টা করুন। নিজের উপর আত্মবিশ্বাস রাখুন যে আপনি পারবেন। আমরা চেষ্টা করলেই মোবাইরের নিয়ম থেকে বেরিয়ে মোবাইলকে আমাদের নিয়মে পরিচালনা করতে পারবো। তাই বলবো নিজের উপর বিশ্বাস রেখে উপরের নিয়মদ্বয় কাজে লাগিয়ে নিজেকে মোবাইল নামক জেলখানা থেকে বের করে আনুন। 

আশা করছি উপরের মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার নিয়ম সমূহ আপনাদের পছন্দ হবে এবং কাজে লাগাতে সহজ হবে। আপনার মোবাইলের প্রতি আসক্তি বিলুপ্ত করতে উপরের নিয়ম গুলো শতভাগ কাজে দিবে। আজকের পোস্ট সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।
Bloggbine.com

Help us to visit Bloggbine.com Regular. If any Questions please let us know by our contact page, Thank you.

Post a Comment

Previous Post Next Post