![]() |
আসল Casio ক্যালকুলেটর চেনার উপায় |
আসল Casio ক্যালকুলেটর চেনার উপায় ২০২৩
বর্তমানে আমরা অনেকেই বাজার থেকে সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটর কিনে থাকি কিন্তু আমরা হয়তো অনেকেই জানি না বাজার থেকে কেনা অধিকাংশ ক্যালকুলেটর ই নকল ক্যালকুলেটর হয়ে থাকে। এই নকল ক্যালকুলেটর ক্রয় করে শুধু আমাদের অর্থই নষ্ট হয় না আমাদের কাজেও আমরা ঠিকভাবে তা ব্যাবহার করতে পারি না। এছাড়াও আসল ক্যালকুলেটর থেকে নকল ক্যালকুলেটর এর ব্যবহার সময়কাল কম হয়।
নকল ক্যালকুলেটর এর সবচেয়ে বড় ভোগান্তি হলো অনেক ক্যালকুলেশন এই নকল ক্যালকুলেটর দিয়ে করা যায় না আবার নকল ক্যালকুলেটর বেশিদিন টিকেও না। এই জন্য আমাদেরকে জানতে হবে আসল ক্যালকুলেটর চেনার উপায় গুলো। আমরা যদি আসল ক্যালকুলেটর চেনার উপায় গুলো জানতে পারি তাহলে সহজেই বুঝতে পারবো কিন্তা আসল সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটর আর কোনটা নকল ক্যালকুলেটর। আজকের পোস্ট থেকে আমরা জানবো আসল Casio ক্যালকুলেটর চেনার উপায় ২০২৩.
আসল Casio ক্যালকুলেটর চেনার উপায় কি?
আসল ক্যালকুলেটর চেনার উপায় জানার আগে আমাদের কিছু তথ্য জেনে নেওয়া ভালো। পৃথিবী জুড়েই যে কোম্পানিটি আদর্শভাবে ইলেকট্রিক প্রোডাক্টের চাহিদা মিটিয়ে আসছে সেটি হলো CASIO কোম্পানি। এটি একটি জাপানি কোম্পানি। ১৯৪৬ সালে জাপানের টোকিও শহরে CASIO নামের এই কোম্পানিটি যাত্রা শুরু করে। পৃথিবী জুড়েই এই CASIO প্রোডাক্টের অতুলনীয় খ্যাতি রয়েছে।
অধিকাংশ মানুষ তাই এই কোম্পানির প্রোডাক্ট গুলোর উপর চোখ বন্ধ করেই ভরসা রাখে। কিন্তু কিছু নকল কোম্পানি CASIO এর প্রোডাক্ট গুলো কপি করে নকল প্রোডাক্ট বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। এর জন্য আমাদের জানা জরুরি যে, আসল CASIO ক্যালকুলেটর চেনার উপায় গুলো কি কি। সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর এর দিক থেকে এই কোম্পানির ক্যালকুলেটর গুলো এগিয়ে আছে।
আসল Casio ক্যালকুলেটর চেনার উপায় গুলো এক নজরে
আসল ক্যালকুলেটর চেনার উপায় গুলো এক নজরে দেখে নেওয়া যাক চলুন। আসল CASIO ক্যালকুলেটর চেনার নিনজা টেকনিক গুলো হলো:
- ক্যালকুলেটরের স্ক্রিন পর্যবেক্ষণ করা
- ডায়াগনস্টিক পদ্ধতি বা Diagnostic Method এ চেক করা
- সোলার প্যানেল পদ্ধতি চেকআপ
- সোলার প্যানেলের সাথে মূল সার্কিটের সংযোগ পরীক্ষা করা
- Bright Dot পদ্ধতি চেক করা
- QR কোড পদ্ধতি চেকআপ
উপরের এই উপায় গুলো আমরা যদি জেনে রাখি তাহলে আমরা আসল ক্যালকুলেটর চিনতে পারবো সহজেই। আমাদের কাজেও লাগবে আবার টাকাও সঠিক ভাবে ব্যবহার হবে। চলুন এখন বিস্তারিত আলোচনা করা যাক যে কিভাবে এই কাজ গুলো করবেন, কিভাবে চেক করবেন ক্যালকুলেটর আসল নাকি নকল।
ক্যালকুলেটরের স্ক্রিন পর্যবেক্ষণ
আসল Casio ক্যালকুলেটর চেনার উপায় গুলোর মধ্যে প্রাথমিক উপায় হলো ক্যালকুলেটর এর স্ক্রিন পর্যবেক্ষণ করা, আসল ক্যালকুলেটর এর ক্ষেত্রে ক্যালকুলেটর এর স্ক্রিন স্পষ্ট এবং ব্রাইট কালার এর হবে। নকল ক্যালকুলেটর এর স্ক্রিন উজ্জ্বল হবে না, সেটি হবে হালকা উজ্জ্বলের।
আবার আপনি যখন আসল CASIO ক্যালকুলেটর বন্ধ করবেন অর্থাৎ ( shift+AC ) প্রেস করবেন তখন স্ক্রিনে CASIO লেখাটি ভেসে উঠবে। কিন্তু নকল ক্যালকুলেটর এর ক্ষেত্রে ( shift+AC ) বাটন ক্লিক করবেন তখন CASIO লেখাটি আসবে না। এই পরীক্ষাটি করার মাধ্যমে আপনি আসল ক্যালকুলেটর চিনতে পারবেন।
ডায়াগনস্টিক পদ্ধতি বা Diagnostic Method
প্রথম ধাপে যদি দেখেন CASIO লেখা টি এসেছে তাহলে ডায়াগনস্টিক পদ্ধতিতে ক্যালকুলেটর চেক করে দেখতে পারেন। কারণ নকল কোম্পানি গুলো অনেকাংশই আসল ক্যালকুলেটর এর অনুরূপ চলার চেষ্টা করে। তাই কয়েকটি ধাপে পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে আপনি আসল ক্যালকুলেটর চিনতে পারবেন।
ডায়াগনস্টিক ফাংশনটি সকল ক্যালকুলেটরে থাকে না, এর জন্য আপনাকে CASIO কোম্পানির Fx-991EX মডেলের ক্যালকুলেটর টি হাতে নিতে হবে। অন্য মডেলের ক্যালকুলেটরে এই ফাংশনটি না পেলে আবার ভাববেন না যে এটি নকল ক্যালকুলেটর। মনে রাখবেন, এই ডায়াগনস্টিক ফাংশনটি শুধু মাত্র Fx-991EX মডেলেই বিদ্যমান।
ডায়াগনস্টিক ফাংশনটি চেক করতে আপনাকে প্রথমে শিফট বাটনে চেপে সেভেন বাটন ও অন বাটনে প্রেস করতে হবে। সহজভাবে বলতে গেলে ( Shift+7+ON ) একসাথে ক্লিক করলে ডায়াগনস্টিক ফাংশনটি চালু হয়ে যাবে। ডায়াগনস্টিক ফাংশনটি হলো ক্যালকুলেটর স্ক্রিনে যে যে সংখ্যা বা বাটন দেখাবে সেটি চাপলে ওই অংশটুকু কালো হয়ে যাবে, না হলে বোঝা যাবে সেটি নকল ক্যালকুলেটর।
Shift+7+On বাটন প্রেস করলে স্ক্রিনে Diagnostic Press AC লেখা দেখতে পাবেন। ডায়াগনস্টিক মুড টি আসলে তারপর 8 ( আট ) প্রেস করুন। অর্থাৎ ডায়াগনস্টিক মুড অন হলে 8 প্রেস করলে ডায়াগনস্টিক অপশনটি চালু হয়ে যাবে। স্ক্রিনে কয়েকটি কী ওয়ার্ড দেখা যাবে যেমন [1], [2], [log], [Shift] বাটন দেখা যাবে সেগুলো প্রেস করলে স্ক্রিনের ওই অংশটুকু কালো হয়ে যাবে। নকল ক্যালকুলেটর বা CASIO Fx-991EX মডেলে এইসকল ফাংশন থাকবে না।
সোলার প্যানেল পদ্ধতি
আমরা জানি CASIO ক্যালকুলেটর গুলোতে সোলার প্যানেল সংযুক্ত থাকে এবং উজ্জ্বল আলোতে গেলে ক্যালকুলেটর এই সোলার প্যানেল থেকেই পাওয়ার সাপ্লাই নিয়ে থাকে। কিন্তু নকল ক্যালকুলেটর এ সোলার প্যানেল সংযুক্ত থাকে না। সেখানে শুধু একটি সোলার প্যানেল এর ডেমো দেওয়া থাকে। তাই আমরা ব্যাটারি খুলে সৌর আলোকে নিয়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পারি যে CASIO আসল নাকি নকল ক্যালকুলেটর এটি।
যদি সূর্যের আলোর ব্যবস্থা না থাকে তাহলে ফোনের ফ্ল্যাশলাইট ক্যালকুলেটর এর সোলার প্যানেল এ ধরলেই বুঝা যায় এটি কাজ করে কিনা। তো বুঝতেই পারছেন যদি কাজ না করে তাহলে নিশ্চিত সেটি একটি নকল ক্যালকুলেটর। এভাবে আপনি সোলার প্যানেল পদ্ধতি তে CASIO আসল ক্যালকুলেটর চিনতে পারবেন।
সোলার প্যানেলের সাথে মূল সার্কিটের সংযোগ পরীক্ষা
আসল CASIO ক্যালকুলেটর চেনার উপায় গুলোর মধ্যে সোলার প্যানেল সংযুক্ত সংযোগ পরীক্ষা একটি অন্যতম পরীক্ষা। আসল ক্যালকুলেটর এ সোলার প্যানেল এর সাথে দুইটি পজেটিভ ও নেগেটিভ তার এর মাধ্যমে ক্যালকুলেটর এর সার্কিট বোর্ডের সাথে জুড়ে দেওয়া থাকে। কিন্তু নকল ক্যালকুলেটর এ তা থাকে না। অনেক সময় ক্যালকুলেটর এ সোলার প্যানেল এর সাথে তার সংযুক্ত থাকলেও সোলার প্যানেল কাজ করে না। সেটি পরীক্ষা করতে উপরের পর্যবেক্ষনটি করতে পারেন। এভাবে আপনি আসল ক্যালকুলেটর চিনতে পারবেন।
ব্রাইট ডট বা ব্রাইট সাইন পরীক্ষা
আসল CASIO ক্যালকুলেটর স্ক্রিন এর সর্ব ডানে উপরে একটি কালো ব্রাইট ডট বা ‘ব্রাইট সাইন’ দেখতে পাবেন। এটি হলো সোলার প্যানেল এর সাইন। আপনি যখন ক্যালকুলেটর এর সোলার প্যানেল এর উপরে আঙ্গুল দিয়ে বা কোনো কিছু দিয়ে ঢেকে দিবেন তখন স্ক্রিনের এই ডট বা ব্রাইট সাইন টি উধাও হয়ে যাবে। আসলে এই ডট বা ব্রাইট সাইন টি দিয়ে বোঝানো হয় সোলার প্যানেল থেকে শক্তি গৃহীত হচ্ছে।
যখন সোলার প্যানেল এর উপরে আঙ্গুল দেওয়া হবে তখন সোলার প্যানেল থেকে শক্তি আসবে না তাই ব্রাইট সাইন টি ও মুছে যাবে। অন্যদিকে নকল ক্যালকুলেটর এ কোন ‘ব্রাইট সাইন’ বা ব্রাইট ডট দেখা যায় না। তাহলে আপনি ব্রাইট ডট পরীক্ষা করেই চিনে ফেলতে পারবেন কোনটি আসল CASIO ক্যালকুলেটর এবং কোনটি নকল ক্যালকুলেটর।
QR কোড পদ্ধতি
CASIO FX-991EX মডেলের ক্যালকুলেটরের একটি অন্যতম ফিচার হলো QR কোড পদ্ধতি। এই পদ্ধতিটি শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম একটি পদ্ধতি। আমরা যখন কোনো সমাধান ক্যালকুলেশন করি সেটির গ্রাফ বা বাস্তব চিত্র নরমাল ক্যালকুলেটর এ দেখতে পারি না। কিন্তু CASIO FX-991EX মডেলের ক্যালকুলেটরে QR জেনারেট করা যায়।
এই QR টি স্ক্যান করলে আপনাকে CASIO এর নিজস্ব ওয়েবসাইট এ নিয়ে গিয়ে আপনার ক্যালকুলেশন এর বাস্তব চিত্র ও ব্যাখ্যা দেখিয়ে দিবে। আমার কাছে এই ফিচারটি সেরা মনে হয়েছে। এর দ্বারা অনেক শিক্ষার্থী উপকৃত হবে।
QR জেনারেট করবেন কিভাবে?
আপনি একটি ম্যাথ করলেন এবং আপনি চাচ্ছেন সেটি বিস্তারিত দেখতে তখন আপনি ক্যালকুলেটর থেকে Shift+Option ক্লিক করে QR কোড জেনারের করতে পারবেন। এরপর যেকোনো QR স্ক্যানার দিয়ে QR টি স্ক্যান করলেই আপনাকে CASIO এর নিজস্ব ওয়েবসাইট এ নিয়ে যাবে এবং সেখানে আপনি আপনার সমাধান এর পূর্নাঙ্গ বিস্তারিত দেখতে পাবেন। কিন্তু নকল ক্যালকুলেটর এ আপনি এই ফাংশনটি পাবে না।
আমাদের শেষ কথা
এভাবে আপনি আসল নকল ক্যালকুলেটর চিনতে পারবেন। যখন ক্যালকুলেটর কিনবেন তখন যাচাই বাছাই করে কিনবেন। টাকা দিয়ে নকল জিনিষ কিনে কি লাভ? সেজন্য আমাদের আসল CASIO ক্যালকুলেটর চেনার উপায় গুলো জানতে হবে এবং আসল ক্যালকুলেটর চিনতে হবে। আসল ক্যালকুলেটর এ যতো দুর্দান্ত অঙ্ক সমাধান করা যায় নকল ক্যালকুলেটর এ তা কিন্তু করা যায় না। ধন্যবাদ।
Tags:
Info